SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

Job

প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (পিটিআই) || ইন্সট্রাক্টর (19-06-2019) || 2019

All Question

মা, ভাষা ও মাতৃভূমি

ভূমিকাঃ মানুষের অস্তিত্বের প্রধান তিনটি অবলম্বনই হচ্ছে মা, ভাষা আর মাতৃভূমি। মা, মাটি ও মাতৃভাষা একই সূত্রে গাঁথা। পৃথিবীতে মা একজনই যিনি আমাদের শক্তি, সাহস আর আশ্রয়ের ঠিকানা। যার ভালোবাসার ছোঁয়ায় আমরা বেড়ে উঠি। মানুষের সেরা উপহার মা। যার চোখে আমরা স্বপ্ন দেখি, যাকে নিয়ে আমরা আমাদের পৃথিবী সাজাই। মায়ের শেখানো ভাষাই আমাদের মাতৃভাষা আর মায়ের কোলে আমরা যেখানে জন্ম নেই সেটাই আমাদের মাতৃভূমি।

মমতাময়ী মাঃ মা বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রচণ্ড আকর্ষণীয় স্নেহময়ী ও আবেগময় শব্দ। মায়ের মধ্যেই সন্তানের অস্তিত্ব নিহিত। মা মানেই একটি মায়াবী স্নেহময়ী অবস্থান। মা সম্পর্কে বাংলা সাহিত্যে একটি কথা প্রচলিত আছে “কুপুত্র যদি বা হয়, কুমাতা কখনো নয়”। অর্থাৎ মায়ের অবস্থানটি অত্যন্ত সহনশীল ও স্নেহময়ী। সন্তানেরা মায়ের সাথে অসদাচরণ করলেও মা কখনো সন্তানের অমঙ্গল কামনা করে না। সন্তানকে দুটো ভালো খাওয়াতে পারলে কিংবা পরাতে পারলে মায়ের সুখের সীমা থাকে না। সন্তানের অমঙ্গল হলে মা হয়ে পড়ে পাগলপ্রায়। সন্তান বড় হলে, নিজের পায়ে দাঁড়ালে, সুখী হলে মাতৃত্বের সার্থকতায় মায়ের মন ভরে উঠে।

ভাষাঃ আমাদের হাসি-আনন্দ, সুখ-দুঃখ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, আকুলতা-ব্যাকুলতা সবকিছু প্রকাশের মাধ্যম আমাদের মাতৃভাষা। এই ভাষার মাধ্যমেই আমরা শৈশব থেকে আমাদের ভাব বিনিময় করতে শিখি। এই ভাষার মাধ্যমেই মানুষ জ্ঞান, শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জন করে । এই ভাষার মাধ্যমেই মানুষ নিজের আবেগ অনুভূতি, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও চিন্তা অন্যের নিকট পৌছে দেয়।

সাধারণত নিম্ন জাতি প্রভাবশালী জাতির ভাষা, কৃষ্টি, কালচারে প্রভাবিত হয়। পরাজিত জাতি বিজয়ী জাতির ভাষা গ্রহণ করে আবার বিজয়ী জাতি পরাজিত জাতির ভাষাও গ্রহণ করে। এর মাধ্যমে ভাষার সংমিশ্রণ ঘটে এবং নতুন ভাষার সৃষ্টি হয়। এভাবেই যুগে যুগে বিভিন্ন জনপদে অজস্র ভাষার উদ্ভব ঘটেছে।

মায়ের সঙ্গে যেমন সন্তানের সম্পর্ক, মাতৃভাষার সঙ্গেও মানুষের সম্পর্ক তেমনি গভীর। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমাদের দেশের এক শ্রেণীর মানুষ বর্তমানে বিদেশী ভাষায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। বিদেশী ভাষাই এদের ধ্যান-জ্ঞান। এরা হয়তো জানেও না যে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যখন বিদেশী ভাষার দাসত্ব ছেড়ে নিজেদের ভাষার চর্চা আরম্ভ করেছে তখনই তাদের উন্নতির শুরু হয়েছে।

মাতৃভূমিঃ মা ও মাতৃভাষার মতো মাতৃভূমিও আমাদের অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মায়ের পেট থেকে বের হয়ে পৃথিবীর আলো দেখার মুহূর্ত থেকেই মাতৃভূমির মাটিতে আমাদের বেড়ে ওঠা। মাতৃভূমির প্রকৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে আমরা ধারণ করি। মাতৃভূমির জন্য আমাদের যে ভালোবাসা তা সহজাত ও স্বাভাবিক। মাতৃভূমির সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাদের প্রয়োজনে নিজের জীবনও বিলিয়ে দেওয়া উচিত।

উপসংহারঃ জন্ম গ্রহণ করার পর আমরা যথার্থ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠি মা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষার মাধ্যমে। আমাদের জীবনে এদের দান অপরিসীম এবং এদের ঋণ কখনো পরিশোধ করা সম্ভব নয়। আমাদের সকলের উচিত শ্রম ও মেধা দিয়ে মা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষার কল্যাণ করা।

10 months ago

নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধ

ভূমিকাঃ নৈতিকতার সঙ্গে মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য ও গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। প্রতিদিনের ছোট ছোট কথা, ছোট ছোট ব্যবহার, হাসি-রহস্য, একটুখানি সহায়তা, একটু স্নেহের বাক্য, অসহায়ের প্রতি একটুখানি দয়া প্রদর্শন, নম্রতা প্রকাশ, সৌজন্যতা প্রকাশ ইত্যাদির মাধ্যমেই মানুষের নৈতিক শিক্ষা বিকশিত হয়। জন্মগত ভাবে 'মানুষ' হিসেবে পরিচিতি পেলেও ‘মনুষ্যত্ব' অর্জন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। 'Morality is a Particular System of Values and Principles of Conduct.

নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধঃ নীতিবিষয়ক যে শিক্ষা, তা-ই নৈতিক শিক্ষা। সাধারণত ধর্ম বিষয়ক শিক্ষাগুলো নৈতিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত কোনো সমাজের অন্তর্ভুক্ত সদস্যদের কাছ থেকে প্রাপ্ত কল্যাণকর ও কাঙ্ক্ষিত স্থায়ী বিশ্বাস বা আদর্শকে মূল্যবোধ বলা হয়। মূল্যবোধ ও শিক্ষার মধ্যে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক বিদ্যমান। নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার মাধ্যমেই মানুষ মূল্যবোধ সম্পন্ন ও সুনাগরিক হয়ে ওঠে। নৈতিক শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যই হলো মানুষকে কোনো একটি সমাজ-স্বীকৃত আদর্শের পথে পরিচালিত করে তার চরিত্রের উৎকর্ষ সাধন করা। নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে মূল্যবোধের প্রত্যয়টি স্থায়ী হয়। এবং সমাজ, দেশ ও মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করার স্পৃহা তৈরী হয়। নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধের কারণে সমাজের সার্বিক কল্যাণ সাধিত হয় এবং শৃঙ্খলা ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।

সমাজে নৈতিক শিক্ষার প্রভাবঃ নৈতিক আদর্শ সম্বলিত সমাজে কোনো অনাচার থাকে না। ঘুষ, দুর্নীতি, বঞ্চনা, শোষণ, স্বার্থপরতা এসব থেকে সমাজ মুক্ত থাকলেই তাতে নৈতিকতার আদর্শ প্রতিফলিত হয়। নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধ মানুষকে মনের দিক থেকে সম্পদশালী করে তোলে। নৈতিক শিক্ষার বলে বলীয়ান হয়ে একজন মানুষ হয়ে ওঠে সকল প্রকার কলুষমুক্ত। নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষ সত্যকে সত্য বলে চিনতে পারে, মিথ্যাকে মিথ্যা বলে স্বীকৃতি দেয়, যা তার নৈতিক মূল্যবোধেরই ফল।

নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমঃ নৈতিকতা ও মূল্যবোধের শিক্ষা শুরু হয় পরিবার থেকে। একটি শিশুকে মূল্যবোধ শিখাতে হয় নানা ভাবে। নেপোলিয়ান বলেছিলেন, “আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাকে একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব”। কিন্তু বর্তমান সময়ে শিক্ষিত মা পাওয়া গেলেও নৈতিক ও আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত সন্তানের খুব অভাব। তাই শিশুকে নৈতিকতার শিক্ষা দেওয়া উচিত পরিবার থেকে। শিশুকে নানা ভাবে নৈতিকতা শিক্ষা দিতে হবে। সালাম দেওয়া, বিদায় নেওয়ার সময় শুভ কামনা করা, ধন্যবাদ জানানো, দুঃখ প্রকাশ করা, মিথ্যা কথা না বলা, চুরি না করা, অন্যকে অন্যায়ভাবে না মারা, অন্যকে ক্ষমা করতে শেখা, দয়া করা, দান করা, আত্মত্যাগ, দেশপ্রেম ইত্যাদি শিক্ষা দেওয়া পরিবারের প্রধান কাজ।

নৈতিক শিক্ষার অভাবে সমাজের প্রভাবঃ নৈতিকতার অভাব থাকলে মানুষ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। নৈতিকতার অভাবে শিক্ষা গ্রহণ করেও নানা অপকর্মে মানুষ জড়িয়ে পড়ে। মানুষ মানবতা ভুলে নিজের পশুত্বকে জাগিয়ে তুলছে প্রতিনিয়ত। প্রখ্যাত ব্রিটিশ কবি ও ঔপন্যাসিক স্যার উইলিয়াম গোল্ডিং বলেছেন, “মানুষের আদিমতা ও হিংস্রতা সহজাত, সেরকম বুনো পরিবেশ পেলে মানুষ তার সভ্যতার লেবাস খুলে হিংস্র হয়ে ওঠে”। আমাদের সমাজে মূল্যবোধ শিক্ষার অভাবে ব্যাপক অবক্ষয় শুরু হয়েছে। চারদিকে কেবল অন্যায় করার প্রতিযোগিতা। অন্যায় করে কে কত বড় হতে পারে সেই প্রতিযোগিতায় উন্মাদ হয়ে ছুটছে মানুষ। বর্তমানে সবকিছুতেই শুধু ভেজাল আর ভেজাল। মিথ্যাচার, আদর্শহীনতা, উচ্ছৃঙ্খলা, ঘুষ, জালিয়াতি, রাহাজানি প্রভৃতি সমাজ বিরোধী কার্যকলাপে এখন সমাজ নিমজ্জিত মূল্যবোধ শিক্ষার অভাবে।

উপসংহারঃ সমাজকে বিশৃঙ্খলার হাত থেকে মুক্ত করতে হলে এখনকার শিশুদেরকে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের সামনে রাখতে হবে নৈতিক মূল্যবোধের আদর্শ। সত্য ন্যায় ও সুন্দরের প্রতি তাদের ভালোবাসা জাগাতে হবে। নৈতিক মূল্যবোধের পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এখন আমাদের সবাইকে সচেতন, উদ্যোগী ও সক্রিয় হতে হবে।

10 months ago

বই পড়ার আনন্দ

ভূমিকাঃ “বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি ।

বিশাল বিশ্বের আয়োজন 

মোর মন জুড়ে থাকে অতি ক্ষুদ্রতারই এক কোণে 

সেই ক্ষোভে পড়ি গ্রন্থ ভ্রমণ বৃত্তান্ত আছে যাহে 

অক্ষয় উৎসাহে”

বই মানুষের বিশ্বস্ত বন্ধু। সামাজিক জীব হিসেবে মানুষ অন্যের সাহচর্য পাওয়ার পাশাপাশি বইকেও বন্ধু হিসেবে বেছে কে নিয়েছে। বইয়ের সাথে গড়ে তুলেছে আত্মিক সম্পর্ক। মানুষের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনার অনুভূতি ধারণ করে বই অতীত বর্তমান ও অনাগত ভবিষ্যতের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে। আর এজন্যই বই পড়ে আমাদের মন লাভ করে পরম প্রশান্তি ।

বই পাঠের প্রয়োজনীয়তাঃ মানব জীবনে বই এর প্রয়োজনীয়তার কথা বলতে গিয়ে বিশ্ববিখ্যাত ঔপন্যাসিক লিয় টলস্টয় বলেন: “Three things are essential for life and those are books, books and books”. বই মানুষকে একই সাথে আনন্দ ও জ্ঞান দান করে। যুগে যুগে পৃথিবীতে মহা মানুষের আবির্ভাব ঘটেছে। তাঁরা মানুষকে শুনিয়েছেন আত্মার মুক্তির কথা। হোমার, ভার্জিল, শেক্সপিয়ার, দান্তে, কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, এরিস্টটল, প্লেটো, জীবনানন্দ দাস, প্রমথ চৌধুরী সহ বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু তারা রেখে গেছেন তাঁদের মহামূল্যবান বই। এসব বই পড়ে আমরা তাঁদের সান্নিধ্য লাভ করতে পারি। তাঁদের উপস্থিতি উপলব্ধি করতে পারি। তাদের দর্শন, জ্ঞান লাভ করতে পারি, তাঁদের জীবন দর্শন সম্পর্কে জানতে পারি। তাঁরা আমাদের ছেড়ে চলে গেলেও বই তাঁদের সাথে আমাদের সম্পর্ক তৈরী করছে। মানুষের জ্ঞানভান্ডারকে সমৃদ্ধ করার জন্য এবং আনন্দের অফুরন্ত উৎসের জন্য বই পাঠের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। স্পিনোজার মতে 'ভাল খাদ্য বস্তু পেটভরে কিন্তু ভাল বই মানুষের আত্মাকে পরিতৃপ্ত করে'।

আনন্দের উৎস বইঃ বই পাঠে মানুষের কোমল মনে জন্ম দেয় আনন্দ, বেদনা, বিস্ময়, ভীতি, সহানুভূতি, প্রেম-ভালবাসা মায়া-মমতা, ভক্তি ইত্যাদি সুকুমার বৃত্তি। বই পাঠ করার মাধ্যমে মানুষের মনে জাগে এক অপূর্ব শিহরণ। বই পাঠ করে মানুষ এ পৃথিবীর বিশালত্ব অনুভব করতে পারে, অজানাকে জানতে পারে। বই পাঠের মাধ্যমে মানুষ সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের সন্ধান পায়। বই মানুষের মনে নতুন প্রেরণা ও উৎসাহের জন্ম দেয়। সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা সর্বাবস্থায় বই আমাদের পাশে থাকে। বই কখনো পুরানো হয় না ।

বই মানুষের হৃদয়ে আনন্দের এক অফুরন্ত উৎস। বই বিচিত্র বিষয় নিয়ে রচিত, যা মানুষের মনকে আনন্দে ভরিয়ে তুলে। বই পাঠের মাধ্যমে মানুষ তার হৃদয় ও মনকে আনন্দে ভরিয়ে তোলে। বই আনন্দ দানের পাশাপাশি সভ্যতার বাহক হিসেবে কাজ করে। বই পাঠ করার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সভ্যতা সম্পর্কে জানতে পারি। বই বিভিন্ন অজানাকে আমাদের জানতে সাহায্য করে । বই আমাদের নিয়ে যায় কল্পনার রাজ্যে । বই পাঠের মাধ্যমে আমরা কল্পনার জানা-অজানা রাজ্যে ভ্রমণ করতে পারি।

বই নির্বাচনঃ বই জ্ঞানের বাহন হলেও বই নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদেরকে খুবই সতর্ক হতে হবে। বাজারে আজ অশ্লীল ও নিম্নমানের বইয়ে সব জায়গায় সয়লাব হয়ে গেছে। এসকল বই আমাদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। আর বই পড়ার প্রকৃত আনন্দ কেবল মাত্র ভালো বই থেকেই পাওয়া যায়। তাই চরিত্র গঠন ও জ্ঞান অন্বেষনের জন্য আমাদের ভালো বই পাঠ করতে হবে।

সমাপনীঃ বই পাঠে মানুষ আনন্দ লাভ করে থাকে। বইয়ের জন্মলগ্ন থেকে আনন্দ লাভের জন্য মানুষকে অধ্যাবসায়ী হতে হবে। উৎকৃষ্ট বই মানুষকে প্রকৃত আনন্দ দান করে। তাই ভালো বই বেশি বেশি পাঠ করতে হবে।

10 months ago

আবহমান কাল ধরে আমাদের পূর্বপুরুষগণ জন্ম ভূমির আলো বাতাসে বড় হয়ে আবার জন্মভূমির মাটিতেই মিশে গেছেন। তেমনি বর্তমান কালের মানুষ আজ পৃথিবীতে বিচরণ করলেও একদিন পূর্বপুরুষদের মতো জন্মভূমির মাটিতে বিলীন হয়ে যাবে । এজন্যই প্রতিটি দেশ প্রেমিক মানুষ জন্মভূমির প্রতি কৃতজ্ঞ থাকে ।

10 months ago

১৫.১০.২০১৯ 

সদর রোড, ফরিদপুর

প্রিয় শাওন,
আমার স্নেহ ও ভালোবাসা নিও। বাবা-মা'কে আমার সালাম জানিও । গতকাল বাবার চিঠিতে জানতে পারলাম যে, আজকাল তুমি নাকি লেখাপড়ায় অমনোযোগী হয়ে উঠেছো। ঠিকমতো পড়াশুনা করছো না। এটা জেনে আমি কিছুটা হতাশ। পত্র মারফত আরো জানতে পারলাম ইদানিং তুমি ইন্টারনেটে অধিক সময় কাটাচ্ছো। ইন্টারনেট বর্তমান সময়ের একটি বড় আবিস্কার কিন্তু ইন্টারনেট ব্যবহার করার পূর্বে এর সুফল এবং কুফল সম্পর্কে তোমাকে বিস্তারিত জানতে হবে। তাই আজ তোমাকে আমার এ পত্র লেখা ।

বিশ্বকে আজ হাতের মুঠোয় এনেছে যে প্রক্রিয়া তার নাম ইন্টারনেট। তথ্য প্রযুক্তির এ ক্ষেত্রটি আজ পুরো বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে । ইন্টারনেটের সাহায্যে মানুষ উন্নীত হয়েছে এমন এক স্তরে যেখানে সারা বিশ্বের সকল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী একটি সমাজে পরিণত হয়েছে। মানুষের সময় ও দূরত্বকে কমিয়ে এনেছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেটের কতিপয় সুফল দিকের মধ্যে রয়েছে- বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের খবর দ্রুত জানতে পারা। লেখাপড়া ও গবেষণার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বই। অনেক সময় বিদেশ থেকে বই অর্ডার দিয়ে আনতে হয়, যা অনেক খরচ ও সময় সাপেক্ষ। কিন্তু ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন লাইব্রেরীর বই ঘরে বসেই যে কোন সময়ই পড়া সম্ভব। ইন্টারনেটের কল্যাণে আজ আমরা ঘরে বসেই বিভিন্ন জিনিস কেনাকাটা করতে পারছি। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানের আবহাওয়া, জলবায়ু, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ইত্যাদি সম্পর্কেও আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানতে পারি। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা আমাদের আবেগ, অনুভূতি ইত্যাদি জন্য প্রকাশ করতে পারি। পূর্বে যে চিঠি পাঠিয়ে আমাদের দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হতো, এখন ই-মেইলের মাধ্যমে তা সেকেন্ডেই অন্যের নিকট পৌছে যাচ্ছে। এছাড়াও ইন্টারনেটের কল্যাণে আমরা দূরবর্তী আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবের সাথে চাইলেই ভিডিও কলের মাধ্যমে কথা বলতে ও দেখতে পারছি।ইন্টারনেটের সুফলের পাশাপাশি কিছু কুফলও রয়েছে। যেমনঃ ইন্টারনেট ব্যবহার করে মানুষ বিভিন্ন ধরণের ক্রাইম করে যাচ্ছে যা সাইবার ক্রাইম নামে পরিচিত। বর্তমানে সাইবার ক্রাইম ভয়াবহ আকারে বেড়ে চলেছে। নানা রকমের মিথ্যা ও গুজব ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে। বর্তমান সময়ের যুবক-যুবতীরা পর্নোগ্রাফির চিত্র আদান প্রদান করার মাধ্যমে বিভিন্ন রকমের অশ্লীল ও খারাপ কাজে জড়িয়ে পরছে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন রকমের গেইম খেলে তাদের সময় অপচয় করছে এবং চোখ ও মেধার মারাত্মক ক্ষতি করছে। সন্ত্রাসী সকল কর্মকাণ্ড আজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংঘটিত হচ্ছে। ইন্টারনেটের কল্যাণে আজ সামাজিক যোগাযোগ অনেক সহজ হয়েছে। কিন্তু সামাজিক নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভরশীলতা সত্যিকারের যোগাযোগ অনুভূতিকে কমিয়ে দিচ্ছে। বাইরে ঘুরে বেড়ানো, খেলাধুলা, মানুষের সঙ্গে মেলামেশার দক্ষতা ও ইচ্ছা কমে যাচ্ছে।

ইন্টারনেটের অনেক কুফল রয়েছে। তাই তোমাকে সতর্কতার সাথে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে এবং এর ভালো দিক গুলো তোমাকে গ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন ধরণের শিক্ষনীয় ওয়েবসাইট থেকে তুমি তোমার জ্ঞান ভাণ্ডারকে আরো সমৃদ্ধ করো। তোমার সফলতা ও সুস্থতা কামনা করি। চিঠির মাধ্যমে তোমার অগ্রগতি জানাইও।

ইতি
সোহাগ

10 months ago

অক্টোবর ১৫, ২০১৯

বরাবর, 
সম্পাদক

দৈনিক প্রথম আলো
সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বিষয় : সংযুক্ত পত্রটি প্রকাশের জন্য আবেদন ।

জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছি। আশা করছি, প্রতিবেদনটি বিবেচ্য হলে আপনার বহুল প্রচারিত পত্রিকায় প্রকাশ করবেন ।

বিনীত
শামস্ শাওন
কোতয়ালি, ফরিদপুর।

পরিবেশ বিপর্যয় রোধে বৃক্ষরোপণ

বৃক্ষ মানুষের পরম বন্ধু । দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সুজলা-সুফলা পৃথিবী প্রতিদিন বৃক্ষ শূন্য হচ্ছে। প্রতিনিয়তই অবাধ ও নির্বিচারে চলছে বৃক্ষনিধন। ক্রমাগতভাবে বৃক্ষনিধনের ফলে প্রাণীর জীবনধারণের নিয়ামক অক্সিজেনের সরবরাহ হ্রাস পাচ্ছে প্রবলভাবে। বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব প্রকাশ করতে গিয়ে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন “আমরা যেমন ম্লান করি এবং শুভ্র বস্ত্র পরিধান করি, তেমনি বাড়ির চারপাশে যত্নপূর্বক একটি বাগান করে রাখা ভূদ্রপ্রথার একটি অবশ্য কর্তব্য অঙ্গ হওয়া উচিত” ।

মানুষ ও প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু পযন্ত বৃক্ষের ব্যাপক আবশ্যকতা রয়েছে। তাই বৃক্ষকে মানব জীবনের ছায়াস্বরূপ বলা হয় । বৃক্ষ মূলত পরিবেশ, আবহাওয়া ও জলবায়ুর ভারসাম্য বজায় রাখে। গাছপালা নিয়মিত বৃষ্টিপাতে সাহায্য করে, নদী ভাঙন থেকে জমিনকে রক্ষা করে। ঝড়-ঝঞ্চা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে বাসগৃহকে রক্ষা করে বৃক্ষ। এছাড়াও বৃক্ষ হতে আমরা খাদ্য পাই, বৃক্ষ আমাদের ত্যাগ করা কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে আর আমাদের জন্য দেয় প্রাণ রক্ষাকারী অক্সিজেন। ঘর-বাড়ি তৈরীর জন্য কাঠ, আসবাবপত্র, নৌকা, জাহাজ, লঞ্চ, স্টিমার, ট্রাক ইত্যাদি তৈরীর জন্যও কাঠ প্রয়োজন। গাছপালা পৃথিবীর আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করে, জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে অধিক উৎপাদনে সাহা করে। এছাড়াও বক্ষ হতে আমরা জীবন রক্ষাকারী নানা রকমের ওষুধ পেয়ে থাকি ৷ 
পৃথিবী যদি বৃক্ষ শূন্য হয়ে পরে তবে তা আমাদের জন্য হবে মারাত্মক ক্ষতির কারণ। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস নদী ভাঙন, পাহাড় ধস ইত্যাদি সমস্যা প্রতিনিয়তই দেখা যাবে। ক্রমাগত বৃক্ষ নিধনের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমাগত বেড়ো চলেছে, লেক অঞ্চলের বরফ গলতে শুরু করেছে, সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে অদূর ভবিষ্যতে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাবে। কবি রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, 'দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর' ।

তাই আমাদের সকলের উচিত বেশি বেশি পরিমাণে বৃক্ষরোপন করে এ পৃথিবীকে আমাদের বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা ।

10 months ago

The women have proved in the modern world that they do not lag behind the men in works. Their role does not come to an end as a mother or a wife. There are many fields of works which are now opened to them. They are now working in schools, colleges, universities as teachers. They do not lag behind in politics and governing a state. It is they who are now in the front line of the politics of Bangladesh.

= আধুনিক বিশ্বে নারীরা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, তাঁরা কর্মক্ষেত্রে পুরুষদের থেকে পিছিয়ে নেই। একজন মা অথব একজন স্ত্রী হিসেবে তাদের ভূমিকা কখনো শেষ হয় না। বর্তমান সময়ে তাদের জন্য কাজের বিভিন্ন ক্ষেত্র খোলা রয়েছে। তাঁরা বর্তমানে শিক্ষক হিসেবে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করছেন। তাঁরা বর্তমানে রাজনীতি বা রাজ পরিচালনায়ও পিছিয়ে নেই । ইনারা তাঁরাই যারা বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতির সামনের সারিতে অবস্থান করছেন।

10 months ago

বাংলা ভাষায় ণত্ব বিধানের পাঁচটি নিয়ম হলোঃ

১. ঋ, র, ষ এই তিনটি বর্ণের পর তৎসম শব্দের দন্ত্য ‘ন’ মুধন্য “ণ” হয়। যেমন: ঋণ, ঘৃণা, রণ, বর্ণ ইত্যাদি ।
২. ঋ, র, ষ এর পর স্বরবর্ণ, ক-বর্গ, প-বর্গ, ষ হ অথবা ং (অনুস্বার) থাকলে তার পরবর্তী দন্ত্য 'ন' মূর্ধন্য “ণ” হয়। যেমন: লক্ষণ, ভক্ষণ, রেণু, পাষাণ ইত্যাদি ।
৩. ট বর্গের পূর্বে দন্ত্য ‘ন' মূর্ধন্য 'ণ' হয়। যেমন: বণ্টন, লুণ্ঠন, খণ্ড ইত্যাদি। 
৪. প্র, পরা, পরি, নি এই চারটি উপসর্গের পরবর্তী দন্ত্য ‘ন’ মূর্ধন্য “ণ” হবে। যেমন: প্রণাম, প্রমাণ, পরায়ণ, পরিণতি ইত্যাদি।
৫. ত, থ, দ, ধ এর পূর্বে সংযুক্ত বর্ণে দন্ত্য 'ন' হয়, ‘ণ' হয় না। যেমন: দৃষ্টান্ত, বৃত্ত, গ্রন্থ, ক্রন্দন, বন্ধন ইত্যাদি ।

10 months ago